কাজিয়া শেষ নয়! কেদারহাটে সৌজন্য দেখালেন মামা-ভাগ্নে, কিন্তু দূরত্ব রইল জারি
ইউবিএন:সৌজন্যের হাসি ফুটল, কিন্তু মনোমালিন্যের বরফ গলল না। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোচবিহারের তৃণমূল রাজনীতির মঞ্চে দেখা গেল এক অন্য ছবি—মামা-ভাগ্নে প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বর্তমান জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক একসঙ্গে।
স্থান মাথাভাঙা ১ ব্লকের কেদারহাটের জোড়শীমুলী, তৃণমূল কংগ্রেসের আয়োজিত বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ বিলি কর্মসূচি। কিন্তু এই মানবিক অনুষ্ঠানের আড়ালেই চোখে পড়ল রাজনৈতিক নাটকের দৃশ্যপট—‘কাজিয়া শেষ নয়!’
ত্রাণ বিলির মঞ্চে ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, তৃণমূল জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বর্তমান জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। বহুদিনের ঠান্ডা সম্পর্কের পর এদিন দু’জনকে হাসিমুখে কথা বলতে, করমর্দন করতে, এমনকি একে অপরকে পিঠ চাপড়ে দিতে দেখা যায়। মুহূর্তেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে তাঁদের ‘মামা-ভাগ্নে মিলন’।
তবে মঞ্চের হাসি যতই মনোমুগ্ধকর হোক, বাস্তব রাজনীতি যে এখনও গাঢ়, তা স্পষ্ট। উপস্থিতদেরই কেউ কেউ বলছেন, “বাহ্যিক সৌজন্য আছে, কিন্তু ভেতরের দূরত্ব অটুট।”
পাশাপাশি বসেও কোনো কথা হয়নি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ণ গুহ ও প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মধ্যে।
এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গী ছিলেন দলের অপর প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন—যা নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
সভা মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন রসিক ভঙ্গিতে বলেন,
“আরে গোসা, কাজিয়া বাদ দে!”
তাঁর মন্তব্যে হাসির রোল উঠলেও, তা যেন আরও স্পষ্ট করে দিল দলীয় অভ্যন্তরের অস্বস্তির সুর। অভিজিৎ দে ভৌমিকের ঠান্ডা জবাব,
“আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।”
এরপর দু’জনের মধ্যে নিচু স্বরে কিছু আলাপচারিতা, এবং রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ভাগ্নের পিঠে হাত রাখা — সব মিলিয়ে তৈরি হয় মেলবন্ধনের ক্ষীণ আভাস।
কিন্তু বিকেলে রাজনৈতিক সভামঞ্চে আর একসঙ্গে দেখা যায়নি দু’জনকে। মিলনের সেই হাসি যেন দুপুরেই থেমে গেল। ফলে প্রশ্ন এখন একটাই—
তৃণমূলের কোচবিহার রাজনীতিতে বরফ কি আদৌ গলছে, নাকি সৌজন্যের মুখোশেই লুকিয়ে আছে পুরনো অভিমান?
দলীয় মহল আপাতত নীরব। কেউ মুখ খুলছেন না, তবে কেদারহাটের ঘটনাই প্রমাণ করছে—